শিক্ষার উপাদান-শিক্ষার্থী,শিক্ষক,পাঠক্রম ও পরিবেশ।। পর্ব-১।।

শিক্ষার উপাদান-শিক্ষার্থী,শিক্ষক,পাঠক্রম ও পরিবেশ।





শিক্ষার উপাদান গুলি কে প্রধানত পাঁচটি  ভাগে ভাগ করা যায়।

যথা-

১) শিক্ষার্থী
২) শিক্ষক
৩) পাঠক্রম  
৪) সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি 

 ৫) পরিবেশ।



                                শিক্ষার্থী

শিক্ষার প্রথম ও প্রধান উপাদান হলো শিক্ষার্থী।  শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে শিক্ষার যাবতীয় কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। শিক্ষার্থী এক ধরনের জৈব  মনোসামাজিক সত্তা। আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্তর্নিহিত শক্তির সার্বিক বিকাশ সাধন করা। শিক্ষার্থী পরিবেশ ও  বংশগতির দ্বারা প্রভাবিত হয়। বংশগতির বাহক জিন। এই জিন ক্রোমোজোমের মধ্যে থাকে।
উডওয়ার্থ ও মারকুইস এর মতে, 

ব্যক্তি= বংশধারা    x পরিবেশ



ব্যক্তি= বংশধারা x পরিবেশ




                                  শিক্ষক

শিক্ষার অপর গুরুুত্বপূর্ণ উপাদান হলো শিক্ষক। সেই প্রাচীনকাল থেকে  আজ অবধি শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রাচীনকালে শিক্ষককে গুরু হিসাবে পূজা করা হতো। "একটি বই, একটি কলম, একটি শিশু এবং একজন শিক্ষক বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে "।

একজন সুশিক্ষক ছাত্রের সমগ্র জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।সুশিক্ষক হতে গেলে যে গুনাবলী শিক্ষকের মধ্যে থাকা প্রয়োজন তাহল-
  



১)নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ানুবর্তিতা
২)শ্রেনীকক্ষ পরিচালনার দক্ষতা
৩)পর্যবেক্ষন ক্ষমতা
৪)শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে উত্তম যোগাযোগ সাধন করার ক্ষমতা
৫)শিক্ষন দক্ষতা
)বিষয়বস্তুর প্রতি গভীর জ্ঞান
৭)সঠিক পরিকল্পনা করার ক্ষমতা
৮)ধৈর্য্য ও ইতিবাচক মনোভাবের অধিকারী
৯)সত্যবাদিতা ও সৎচরিত্রের অধিকারী
১০)পরামর্শদান ও সহপাঠক্রমিক কার্যে অংশদান করার ক্ষমতা
<




                       পাঠক্রম    


শিক্ষার অন্যতম তাৎপর্যপূর্ন উপদান হলো পাঠক্রম।পাঠক্রমকে বাদ দিলে শিক্ষা অর্থহীন হয়ে পড়ে।পাঠক্রম শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ক্যারিকুলাম (Curriculum)  ।এই    ক্যারিকুলাম শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ currere  থেকে, যার অর্থ পথ (Course) বা দৌড়ের পথ (    Race course) । পাঠক্রম শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় পাঠ ও ক্রম।পাঠ অর্থ হলো পড়ার যোগ্য এবং ক্রম অর্থ হলো যা নির্দিষ্ট স্তর ভিত্তিক।বয়স,আগ্রহ,চিন্তনের ক্ষমতা, আগ্রহ,মনোযোগ,কৌতুহল কে মাথায় রেখে ক্রম বিবেচনা করা হয় ।  


পাঠক্রমের ধারণা দুধরণের হয- সংকীর্ণ অর্থে ও ব্যাপক অর্থে।

 সংকীর্ণ অর্থে পাঠক্রম হলো শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশ সাধন করা যা শ্রেণীকক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই অর্থে পাঠক্রম  অপরিবর্তনীয় ও শিক্ষককেন্দ্রিক। 

ব্যাপক অর্থে পাঠক্রম হলো শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষের বাইরে ও ভিতরে যা সক্রিয়তা ভিত্তিক কর্ম করে ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে তার সমষ্টিকে বোঝায়। বাইরে বলতে খেলার মাঠ, লাইব্রেরী, পরীক্ষাগার, বাগান, শিক্ষনীয় ভ্রমণ ইত্যাদি।এই অর্থে পাঠক্রম পরিবর্তনশীল, শিশুকেন্দ্রিক ও সার্বিক বিকাশ সাধন করে।





পাঠক্রমের প্রকারভেদ 


  
জ্ঞান ভিত্তিক পাঠক্রম
শিশু কেন্দ্রিক পাঠক্রম
অভিজ্ঞতা ভিত্তিক পাঠক্রম
জীবন কেন্দ্রিক পাঠ্যক্রম
সক্রিয়তা ভিত্তিক পাঠক্রম
কেন্দ্রীয় ভিত্তিক পাঠক্রম
শিল্প কেন্দ্রিক পাঠ্যক্রম
সমন্বিত পাঠক্রম


Multiple choice Type Question 


শিক্ষাশ্রয়ী দর্শন-ভাববাদ,প্রকৃতিবাদ







শিক্ষাশ্রয়ী দর্শন-ভাববাদ,প্রকৃতিবাদ,বস্তুবাদ ও প্রয়োগবাদ






আমরা এই অধ্যায়ে শিক্ষাশ্রয়ী দর্শন সমন্ধ্যে আলোচনা৷ করব।বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা যেমন TET,CTET,NET  ও  SI of School র জন্য এই অধ্যায়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। 

এখানে চারপ্রকার দার্শনিক মতবাদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
যথা-



    









ভাববাদ,প্রকৃতিবাদ,প্রয়োগবাদ ও বস্তুবাদের তুলনামূলক আলোচনা   





ভাববাদ ( Idealism) প্রকৃতিবাদ- (Naturalism) প্রয়োগবাদ (Pragmatism) বস্তুবাদ/বাস্তববাদ(Realism)
সমর্থক- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিবেকানন্দ দয়া নন্দ সরস্বতী ঋষি অরবিন্দ শঙ্করাচার্য সক্রেটিস প্লেটো ফ্রয়েবেল রাধাকৃষ্ণন প্রমুখ সমর্থক-রুশো, এ্যারিস্টোটল, হার্বার্ট , ল্যামার্ক জন ডিউই,কিলপ্যাট্রিক,ইউলিয়াম জেমস প্রমুখ সমর্থক-হার্বাট স্পেনসার,রাসেল,জন লক,ইরাসমাস,মিলটন,মুন্সী প্রেম চাঁদ
জনক -প্লেটো জনক- এমিল জোলা (Émile Zola) জনক-চার্লস স্যান্ডার্স পিয়ার্স জনক- অ্যারিস্টটল
শিক্ষার লক্ষ্য- আত্মোপলব্ধি, আধ্যাত্মিক বিকাশ, পবিত্র জীবনের প্রস্তুতি, নৈতিক বিকাশ, সংস্কৃতির প্রসার, বুদ্ধিও যৌক্তিকতার বিকাশ শিক্ষার লক্ষ্য-শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি,সংস্কৃতির বিকাশ,পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হওয়ার সার্থক ক্ষমতা অর্জন,বর্তমান ও ভবিষ্যতের সুখ অর্জন,পবিত্র জীবনের জন্য প্রস্ততি,বৌদ্ধিক ও যৌক্তিক শক্তির বিকাশ সাধন। শিক্ষার লক্ষ্য সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনশীল। এটি পূর্ব নির্ধারিত নয়। শিক্ষার লক্ষ্য স্থান, কাল ও পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তনশীল। সামাজিক সংগতিবিধান ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশ, নতুন নতুন নৈতিকতা সৃষ্টি শিক্ষার লক্ষ্য- বাস্তব জীবনের জন্য প্রস্তুতি, ইন্দ্রিয়ের প্রশিক্ষণ, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ, সমাজ ও পরিবেশের সাথে মিথস্ক্রিয়া, বৃত্তিগত প্রশিক্ষণ, বিজ্ঞানসম্মত ও পরীক্ষা কেন্দ্রিক জ্ঞান নির্মাণ,সুখী জীবনে প্রস্তুতি
শিক্ষক মুখ্য ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে প্রকৃতি হল সবচেয়ে শক্তিশালী শিক্ষক।শিক্ষকের ভূমিকা গৌন যেখানে শিশুর অবস্থান কেন্দ্রে। শিক্ষক দর্শক ও পথপ্রদর্শক। শিক্ষক -বন্ধু দার্শনিক ও পথপ্রদর্শক। শিক্ষকের স্থান মুখ্য কারণ তিনি শিশুকে জীবনের বাস্তবতার সংস্পর্শে আনেন। শিক্ষক তার নিজস্ব মতামত কে সরিয়ে বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানে প্রভাবিত করবেন।
আদর্শবাদ অনুসারে নিয়মিত ও কার্যকর শিক্ষার একমাত্র স্থান হলো বিদ্যালয়।বিদ্যালয়ে হল আদর্শ স্থান শিশুদের আনন্দের সাথে কর্ম করার ক্ষেত্রে। বিদ্যালয় প্রকৃতির কোলে হওয়া বাঞ্ছনী। বিদ্যালয়ের পরিবেশ হবে মুক্ত। বিদ্যালয় হল শিশুর পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার। এটি সমাজের ক্ষুদ্র সংস্করণ। বিদ্যালয় হল সামাজিকভাবে সুপরিকল্পিত একটি প্রতিষ্ঠান। এটি সমাজের দর্পণ।
১) সবচেয়ে প্রাচীন বিচারধারা এটি ২) আত্মোপলব্ধির জন্য সত্যম, শিবম, সুন্দরম (Truth,Beauty and goodness) হওয়া বাঞ্ছনীয় ৩)ভাববাদীরা ভবিষ্যৎ জীবন উপর জোর দেয় ৪) ভাববাদ কে আধ্যাত্মবাদ বলা হয়। ১) প্রকৃতিবাদ প্রকৃতি থেকে ঈশ্বরকে আলেদা করা হয়েছে।২) বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বর বা আধ্যাত্মিকতার বিশ্বাসের বদলে মানুষকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ। শিক্ষার পদ্ধতি হলো হাতেকলমে প্রশিক্ষণ ( Learning by doing বস্তুবাদ বস্তুর অস্তিত্ব সম্বন্ধিত বিচারধারা। বস্তুবাদ এর মতে বিশ্বের সমস্ত বস্তু সত্য যা প্রত্যক্ষন করা যায়।

  


Multiple Choice Type Question 



 

স্বাধীনতার পর ভারতের বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন:-



স্বাধীনতার পর ভারতের বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন:-



☑️ ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন /রাধাকৃষ্ণন কমিশন(Radhakrishnan commission1948-49)


ক) ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর সভাপতিত্বে 19 48 সালে 4 নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়।
এবং 1949 সালে কমিশন তার সুপারিশ পেশ করেন।



খ) এই কমিশনের সদস্য ছিলেন ডি. তারা চাঁদ ,ড. জাকির হোসেন, ড. মেঘনাথ সাহা ,ড. আর্থার ই মর্গ্যান ড .নির্মল কুমার সিদ্ধান্ত ,ড.জেমস এম ডাফ


গ) গবেষণা এবং শিক্ষার মান, পাঠক্রম এবং শিক্ষার বাহন শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যকর আবাসন, নিয়মানুবর্তিতা ,উচ্চ শিক্ষা প্রশাসন ,নারী শিক্ষা, গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কমিশন প্রকাশ করেন।


☑️ মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন /মুদালিয়ার কমিশন (1952- 53 secondary education mission or mudaliar commission)


ক) মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দি লক্ষন স্বামী মুদালিয়ার সভাপতিত্বে 1952 সালে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়।
1953 এই রিপোর্ট পেশ করা হয়।


খ) এই কমিশনের 8 জন সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে 6 জন ভারতীয় ও দুজন বিদেশি।
সদস্যগণ হলেন - শ্রীমতি হংস মেহেতা, শ্রী জে এ তারপোরওয়ালা, অনাথ নাথ বসু, এম টি ব্যাস ,জন কৃষ্টি ,কে আর উইলিয়ামস।


গ) কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষা পরিকাঠামো ,পরীক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার ,শারীর শিক্ষা ,কারিগরি শিক্ষা, ভাষা শিক্ষা, শিক্ষাদান পদ্ধতি ,চরিত্র গঠনের জন্য শিক্ষা, নির্দেশনা ও পরামর্শদান, দিক গুলি নিয়ে সুপারিশ গঠন করেন।


☑️ ভারতীয় শিক্ষা কমিশন /কোঠারি কমিশন (Indian education commission or kothari commission 1964 -66)


ক) অধ্যাপক ডি এস কোঠারি এই কমিশনের সভাপতি ছিলেন।


খ) এই কমিশনটি 17 জন সদস্য নিয়ে 1964 সালের চৌঠা জুলাই গঠিত করা হয়েছিল। এর মধ্যে 11 জন সদস্য ছিলেন ভারতীয় ও ৬ জন সদস্য ছিলেন বিদেশি।
তারা হলেন এ .এর. দাউদ ,আর. এ. গোপালস্বামী ,ভি. এস .ঝা, পি.এন .কৃপাল এম.ভি.মাথুর ,বি .পি. পাল,

বিদেশি শিক্ষাবিদরা হলেন- এইচ .এল.এলভিন, জ্যঁ. থমাস,ম্যাকডুগাল প্রমূখ।


1966 সালে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী শ্রী. এম.সি চাগলার এর নেতৃত্বে রিপোর্ট পেশ করা হয়।


সমগ্র রিপোর্টটি ছিল 692 পৃষ্ঠার, এবং তার মধ্যে মূল রিপোর্ট 489 পৃষ্ঠার।


✍কোঠারি কমিশনের মতে সার্বিক শিক্ষার কাঠামোটি হবে -১০+২+৩+২


☑️ জাতীয় শিক্ষানীতি (national policy on education 1986)


✍কেন্দ্রীয় সরকার 1986 সালে 21 এপ্রিল জাতীয় শিক্ষানীতি নামক একটি খসড়া রচনা করেন।

জাতীয়  শিক্ষানীতির আলোচ্য বিষয় "challenge of education a policy perspective" নামে একটি পুস্তিকায় প্রকাশিত হয়।


এই শিক্ষানীতি 12 অংশে বিভক্ত ছিল।
প্রথম অংশটি ভূমিকা এবং শেষ অংশটি ভবিষ্যত নামে পরিচিত


অ্যাকশন প্ল্যান _অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড_ প্রোগ্রাম অফ অ্যাকশন _সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা _নন ফরমাল এডুকেশন _(early childhood care and education ECCE) প্রভৃতি ছিল জাতীয় শিক্ষানীতির অন্তর্ভুক্ত।

✍সার্বিক শিক্ষার কাঠামো হবে ১০+২+৩+২


☑️ জাতীয় শিক্ষানীতি সংশোধিত খসড়া রামমূর্তি রিভিউ কমিটি( commission for review of national policy on education)


জাতীয় মোর্চা সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষা নীতির ভুল ত্রুটি সংশোধন করে 1990 সালে 26 ডিসেম্বর রামমূর্তি কমিটি পেশ করা হয়।
তবে এটি কার্যকারী হয় 1992 সালে।
এর শিরোনাম ছিল-( TOWARDS AN ENLIGHTENED AND HUMAN SOCIETY)


এই কমিশনের সভাপতি ছিলেন আচার্য রামমূর্তি।
এছাড়া আরো 17 জন শিক্ষা নিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসান_ নারী শিক্ষার উন্নতি_ শিক্ষার বৃত্তিমুখী করণ_ প্যারা শিক্ষক( para teacher)নিয়োগ ছিল এই কমিশনের সুপারিশ।


☑️(Sarva shiksha abhiyan)সর্বশিক্ষা অভিযান।


সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্প টি 2000 সালে চালু করা হয়।
এর মূল লক্ষ্য ছিল 2010 সালের মধ্যে 6 থেকে 14 বছর বয়স সকল শিশুকে ব্যবহারযোগ্য প্রাথমিক শিক্ষা দিতে হবে।

2007 সালের মধ্যে শিশুকে নিম্ন প্রাথমিক শিক্ষা ও 2010 সালের মধ্যে সকল শিশুর উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।

2010 সালের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য ও সামাজিক শ্রেণী বৈষম্য দূরীকরণ করতে হবে।


Multiple  Choice Type question

 


স্বাধীনতার পূর্বে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা কমিশন:-:-

স্বাধীনতার পূর্বে  গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা   কমিশন:-






☑️
অ্যাডামস রিপোর্ট(Adam's Report 1835-38)


➡️ক)পরাধীন ভারতে শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন ছিল তা অনুসন্ধানের  প্রথম   রিপোর্ট ছিল অ্যাডামসের রিপোর্ট। লর্ড বেন্টিং এর আদেশে উইলিয়াম অ্যাডাম এটি তৈরি  করেন।


খ) এখানে দেশীয় শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনটি রিপোর্ট পেশ করা হয়।

প্রথমত-  পূর্ববর্তী সরকারি অনুদান গুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

দ্বিতীয়ত-  রাজশাহী জেলার নাটোর থানা কে  কেন্দ্র করে রিপোর্ট পেশ করা হয়।( কারণ নাটোর থানার সবচেয়ে বেশি গ্রাম ছিল।)

তৃতীয়ত - বাংলা বিহারের পাঁচটি জেলা কে কেন্দ্র করে   রিপোর্ট পেশ করা হয়।


☑️ ভারতীয় শিক্ষা সম্পর্কে  মেকলের মন্তব্য(Macaulay's Minute of 1835):-


ক) 1833  খ্রিস্টাব্দে সনদ নবীকরণ এর মাধ্যমে  ভারতীয়  শিক্ষা বিস্তারের জন্য 1 লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়।  কিন্তু এই টাকা (প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য )কোন শিক্ষা বিস্তারে ব্যবহৃত হবে সেই বিষয়ে  1835 খ্রিস্টাব্দে 2 ফেব্রুয়ারি মেকেলে একটি মন্তব্য পেশ করেন একে মেকলে মিনিট বলা হয়।

*️⃣এই প্রসঙ্গে মেকলে চুঁইয়ে পড়া নীতির কথা  প্রথম ব্যবহার করেন।

☑️ উডের ডেসপ্যাচ(Wood's Despatch  1854)


ক)1854 খ্রিস্টাব্দে চার্লস উড এই দলিল দলিল রচনা করেন যা উডের ডেসপ্যাচ নামে খ্যাত।

খ)এখানে বলা হয় ভারতীয়দের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার জ্ঞান বিস্তার করাই হল শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য।

গ)এখানে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়।

ঘ)এখানে বলা হয়েছে সরকারি সাহায্য ব্যাতিরেখে যাদের পক্ষে নিজের চেষ্টায় প্রয়োজনীয় শিক্ষা আয়োজন করা সম্ভব নয় তাদের জন্য সরকার ব্যবস্থা করবে।

☑️ ভারতীয় শিক্ষা কমিশন /হান্টার কমিশন (1882Hunter Commission)


ক) 1882 খ্রিস্টাব্দে 3ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড রিপন ভারতীয় শিক্ষা কমিশনের জন্য সদস্য নিয়োগ করেন।

খ) এই শিক্ষা কমিশনের সভাপতি ছিলেন উইলিয়াম হান্টার।

গ) এখানে আরো কুড়ি জন সদস্য ছিলেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্যার সৈয়দ মাহমুদ , ভূদেব মুখার্জি, যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর প্রমুখ।

গ) এই কমিশনে বলা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা হবে জনসাধারণের জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষা। জীবনের পক্ষে যা সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয়।

ঘ)তাছাড়া মাধ্যমিক ,শিক্ষা নারী, শিক্ষা উচ্চ,  শিক্ষক- শিখন প্রক্রিয়া, বিশেষ শিক্ষা সম্পর্কে আলাদা আলাদা সুপারিশ গঠন করেন।

☑️ ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন/ কার্জন শিক্ষানীতি (Curzon's education policy1902)


ক) ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সংস্কার ও পুনর্বিন্যাসের জন্য 902 খ্রিস্টাব্দে 27 শে জানুয়ারি লর্ড কার্জনের নেতৃত্বে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠিত হয়।

খ) এই কমিশনের উপযুক্ত অধ্যাপক মন্ডলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব গ্রন্থাগার ,ছাত্রাবাস ,পরিকল্পিত কলেজের শিক্ষার মনোনয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ এর ব্যবস্থা গ্রহণ, ও তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স এর সুপারিশ গুলি তাৎপর্যপূর্ণ।

গ) লর্ড কার্জন 1904 খ্রিস্টাব্দে এই বিলটি পাশ করান ও ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইনে পরিণত করান।


☑️ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন স্যাডলার কমিশন(Sadler commisson1917-19):-


ক) লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাইকেল স্যাডলার এর সভাপতিত্বে 1917 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করা হয়।

খ) 1919 খ্রিস্টাব্দে কমিশন তার রিপোর্ট পাস করেন।
এই কমিশনে বলা হয় উন্নত মাধ্যমিক শিক্ষার উপর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সাফল্য নির্ভর করে ,তাই মাধ্যমিক শিক্ষা সংস্কার না করলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার উন্নতি সম্ভব নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সম্পর্কে এখানে আরও বলা হয়- স্নাতক শ্রেণীর পাঠ্যসূচি হবে তিন বছর ব্যাপী।





Multiple Choice Type Question